ওয়াই-ফাই Router কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

ওয়াই-ফাই Router কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

ব্রডব্যান্ড Internet এর প্রসারের কল্যাণে Wi-Fi Router একটি বহুল ব্যবহার্য জিনিসে পরিণত হয়েছে। বাসায় কিংবা অন্য কোনো স্থানে, এমনকি ফ্রি ওয়াইফাই, যেখানেই Wi-fi ব্যবহার করছেন, আপনি কিন্তু একটি রাউটারে সংযুক্ত রয়েছেন। এই পোস্টে Wi-Fi Router কেনার সময় খেয়াল রাখা উচিত এমন বিষয়সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন।

ওয়াই-ফাই Router কেনার সময় যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

Wi-Fi এক্সটেনডার

আপনার Wi-Fi কানেকশন এর রেঞ্জ নিয়ে যদি অতিরিক্ত সমস্যায় থাকেন, তাহলে ওয়াইফাই এক্সটেনডার ব্যবহার করতে পারেন। সবসময় অনেক এন্টেনাওয়ালা Router কিনে Internet সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়না। বিশেষ করে রেঞ্জ সম্পর্কিত সমস্যার ক্ষেত্রে Wi-Fi এক্সটেনডার ব্যবহার করে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। এছাড়া ডুয়াল ব্যান্ড রাউটারে একাধিক ব্যান্ডের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সুন্দরভাবে সিগন্যাল ডিস্ট্রিবিউট করা যেতে পারে। আবার আপনার কাছে বাড়তি Router পড়ে থাকলে ও তা যদি এক্সটেনডার বা রিপিটার মোডে ব্যবহার করা যায়। এভাবে পুরোনো Router ব্যবহার করে আপনার Wi-Fi কানেকশনকে শক্তিশালী করে তুলতে পারেন।

পরিশেষে এই বলবো, বুঝেশুনে Router কিনুন। Router কিনতে হবে Router বক্সের গায়ে থাকা তথ্য পড়ে, ব্র‍্যান্ড বা কয়টি এন্টেনা আছে তা দেখে নয়। আর কম দামে বেশি এন্টেনার Router কেনা থেকে বিরত থাকুন, এসব Router মূলত বাজে Internet কানেকশন এর কারণ হয়ে থাকে। Wi-Fi Router কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই উল্লেখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন।

পোর্টস ও কানেকটিভিটি অপশন [ Iphone 14 Pro Max ]

Wi-Fi Router কেনার আগে অবশ্যই যথেষ্ট পোর্ট ও কানেকটিভিটি অপশন আছে কিনা তা চেক করে নিন। রাউটারে জরুরি RJ45/Ethernet পোর্ট থাকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ফিচার। এছাড়া এফটিপি ডাটা ট্রান্সফার Router মাধ্যমে সম্পাদন করতে চাইলে সেক্ষেত্রে আপনার কেনা রাউটারে ডেডিকেটেড ইউএসবি পোর্ট আছে কিনা তা দেখে নিন।

Router ফাংশনালিটি

Router কেনার ক্ষেত্রে উক্ত Router বিভিন্ন মোডে ব্যবহার করা যাবে কিনা সেটি চেক করুন। একটি আদর্শ Router অ্যাকসেস পয়েন্ট, রিপিটার, এক্সটেনডার, ইত্যাদি মোডে ব্যবহার করা যাবে। বর্তমানে বেশিরভাগ রাউটারে অ্যাকসেস পয়েন্ট, রিপিটার বা এক্সটেনডার এর মত মোড থাকে যা ব্যবহার করে প্রাইমারি মডেল বা রাউটারের রেঞ্জ বাড়ানো যায়।

Wi-FiRouter

অন্য সকল প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে Router এর প্রযুক্তির বেশ উন্নতি এসেছে, যার ফল হলো ওয়াইফাই ৬ Router। দাম বেশি ও যথাযথ ব্যবহার না থাকায় নতুন প্রযুক্তির এই Routerগুলো আমাদের দেশে এখনো তেমন একটা জনপ্রিয় নয়। তবে বর্তমানে নতুন ডিভাইসগুলোতে Wi-Fi ৬ সাপোর্ট যুক্ত হচ্ছে ধীরেধীরে।

ওয়াইফাই ৬ হলো মূলত 802.11ax standard যা বেশ ডাটা সাশ্রয়ী, ভালো স্পিড প্রদান করে ও বেশ কম ব্যাটারি খরচ করে। অন্যদিকে WiFi 6E এর অর্থ হলো ওয়াইফাই ৬ রাউটারে শুধুমাত্র একটি আলাদা ৬গিগাহার্জ ব্যান্ড যুক্ত থাকা। এই আলাদা ব্যান্ডের সুবাদে অনেক বেশি স্পিড ও গেমিং বা ভিআর এর সাথে ব্যবহারে অনেক কম লেটেন্সি পাওয়া যায়।

সিংগেল ব্যান্ড ভালো নাকি ডুয়াল ব্যান্ড?

সিংগেল ব্যান্ড Routerগুলো শুধুমাত্র ২.৪গিগাহার্জ ওয়েভে ওয়্যারলেস Internet সেবা দেয় ও সর্বোচ্চ ৩০০এমবিপিএস স্পিড দেয়। তবে অনেকগুলো ডিভাইস একসাথে কানেক্টেড থাকলে এই ব্যান্ডের স্পিড কমে যায়। মূলত কম ডিভাইসওয়ালা ছোট ঘরের জন্য সিংগেল ব্যান্ড Router আদর্শ।  

অন্যদিকে আপনার ঘর যদি বড় হয় এবং অনেক ডিভাইসে একসাথে Internetব্যবহারের চিন্তা থাকে, তাহলে ডুয়াল ব্যান্ড Router আপনার জন্য সুবিধাজনক হবে। ডুয়াল-ব্যান্ড Router এর আরেকটি সুবিধা হলো এর মাধ্যমে ২.৪গিগাহার্জ ও ৫গিগাহার্জ ওয়েভে দুইটি আলাদা Wi-Fi নেটওয়ার্ক তৈরী করা যায়।

এছাড়াও ট্রাই-ব্যান্ড Routerও রয়েছে যেগুলোর দাম অনেক বেশি। এসব Router সাধারণ বহুতল বিশিষ্ট বিল্ডিংয়ে হেভি Internet ব্যবহারের জন্য আদর্শ। ট্রাই-ব্যান্ড Routerগুলোতে একটি বাড়তি ৫গিগাহার্জ ব্যান্ড থাকে। এসব Router ১১০০০এমবিপিএস পর্যন্ত স্পিড দিতে পারে, যা মূলত অনেক বিশাল ঘর ও গেমারদের জন্য আদর্শ।

২.৪গিগাহার্জ নাকি ৫গিগাহার্জ, নাকি উভয়?

২.৪গিগাজার্জ এবং ৫গিগাহার্জ মূলত রেডিও তরঙ্গকে বুঝায় ও এগুলোকে ব্যান্ড বলা হয়ে থাকে। ২.৪গিগাহার্জ কানেকশন এর রেঞ্জ ৫গিগাহার্জ কানেকশনের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে। অন্যদিকে ৫গিগাহার্জ কানেকশনের ক্ষেত্রে রেঞ্জ কম হলেও স্পিড অধিক পাওয়া যায়। বলে রাখা ভালো যে ৫গিগাহার্জ ওয়াইফাই এর সাথে ৫জি Internet এর কোনো সম্পর্ক নেই।

Router নিবেন নাকি মডেম?

Router কিনতে গেলে দেখবেন অনেক সময় অনলাইন শপে মডেম এর সাজেশন পাচ্ছেন। কিন্তু বুঝতে হবে মডেম ও Router কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা দুইটি ডিভাইস যা দুইটি আলাদা কাজে ব্যবহৃত হয়। Router এর মাধ্যমে একাধিক ডিভাইসে Internet চালানো যায়, আর মডেমের মাধ্যমে সর্বোচ্চ একটি ডিভাইসে Internet ব্যবহার করা যায়। বাংলাদেশে Internet সার্ভিস প্রোভাইডারগণ বাসাবাড়িতে Router এর মাধ্যমে Internet কানেকশন সেবা প্রদান করে থাকেন, তাই কেনার সময় Router কিনছেন কিনা সে বিষয় নিশ্চিত করুন। সবচেয়ে বেশি ভালো হয় Router কেনার আগে আপনার Internet সার্ভিস প্রোভাইডার বা আইএসপির সাথে কথা বলা। 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url